যীশুর কর্মজীবন

তৃতীয় শ্রেণি (প্রাথমিক স্তর ২০২৪) - খ্রিষ্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - NCTB BOOK

দ্বিতীয় অধ্যায়

যীশুর কর্মজীবন

যীশু জন্মের পর থেকেই তাঁর মা-বাবার সাথে থাকতেন। বড় হতে শুরু করলে তিনি মা-বাবাকে ঘরের কাজে সাহায্য করতেন। বিশেষভাবে কাঠমিস্ত্রি বাবাকে সব কাজেই সাহায্য করতেন। কাজের সাথে সাথে মা-বাবার সাথে তখনকার প্রথা অনুযায়ী মন্দিরেও যেতেন। সুযোগ পেলেই পণ্ডিতদের সাথে কথাবার্তা বলতে গিয়ে জ্ঞানী লোকের মতো শিক্ষা দিতেন। এতে সবাই খুব আশ্চর্য হতো। দেখতে দেখতে তিনি বড় হতে লাগলেন। কালের পূর্ণতায় তিনি তাঁর কর্মজীবনে প্রবেশ করেন।

Content added || updated By

যীশুর প্রচার কাজ

পাঠ: ১

যীশুর প্রচার কাজ

(লুক ৪:১৭-২১)

 

যীশু মা-বাবার কাছ থেকেই শিখেছেন, যে কোনো কাজের জন্যই সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। শৈশবে তিনি মা-বাবার মতো নিরব কর্মী ছিলেন। নিরবতার মধ্য দিয়েই তিনি কাজ করতেন। তিনি যে ঈশ্বরপুত্র তা তিনি কখনও চিন্তা করতেন না বা কাউকে বুঝতেও দিতেন না। ঈশ্বরপুত্র হওয়া সত্ত্বেও তিনি মায়ের কাছ থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে কাজের প্রেরণা লাভ করেছেন। তাঁর অভ্যাস মতো তিনি বিশ্রামবারে সমাজগৃহে গেলেন। সেখানে শাস্ত্র পাঠ করবার জন্যে উঠে দাঁড়ালেন। তাঁর হাতে দেওয়া হলো প্রবক্তা যিশাইয়ের বাণীগ্রন্থ। গ্রন্থ খুলে তিনি সেই অংশটি পেলেন, যেখানে লেখা আছে, “প্রভুর আত্মিক প্রেরণা আমার উপর নিত্য অধিষ্ঠিত। কারণ প্রভু আমাকে অভিষিক্ত করেছেন। তিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন দীনদরিদ্রের কাছে মঙ্গলবার্তা প্রচার করতে; বন্দির কাছে মুক্তি আর অন্ধের কাছে নবদৃষ্টি-লাভের কথা ঘোষণা করতে; পদদলিত মানুষকে মুক্ত করে দিতে এবং প্রভুর অনুগ্রহদানের বর্ষকাল ঘোষণা করতে।" গ্রন্থটি বন্ধ করে যীশু সেবকের হাতে তা ফিরিয়ে দিয়ে আসন গ্রহণ করলেন। সমাজগৃহের সকলেই তাঁর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলো। তখন তিনি তাদের এই কথা বললেন: "এই শাস্ত্রের উক্তি আজই সত্য হলো- যখন তোমরা তা শুনতে পেলে, তখনই!"

 

ক) যীশু যাদের কাছে প্রচার করেছেন তার সঠিক তালিকা, চিত্র দেখে নিজে লিখি।

 

 

খ) বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশের মিল করি।

বাম পাশ

ডান পাশ

i) প্রভুর আত্মিক প্রেরণাi) অন্ধের কাছে নবদৃষ্টি-লাভের কথা ঘোষণা করতে।
ii) প্রভু, যীশুকেii) মুক্তির বাণী প্রচার করতেন।
iii) যীশু পদদলিত মানুষকেiii) আমার উপর নিত্য অধিষ্ঠিত।
iv) যীশু বন্দির কাছেiv) মুক্ত করে দিতেন।
v) যীশু প্রেরিত হয়েছিলেনv) অভিষিক্ত করেছেন।

গ) আমি কীভাবে প্রচার কাজ করতে পারি তা ছকে লিখি।

এ পাঠে শিখলাম

- যীশু প্রচারকাজের জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। তিনি দীনদরিদ্র ও অবহেলিতদের কাছে মঙ্গলবার্তা প্রচার করতে এসেছিলেন।

Content added || updated By

যীশুর শিক্ষাজীবন

পাঠ: ২

যীশুর শিক্ষাজীবন

(লুক ৫: ১-৩, মার্ক ৪: ১-২)

গালীল প্রদেশের নাসারথ গ্রামে যীশু তাঁর বাবা যোসেফের সাথে যে কাজ করতেন, একসময় তা তিনি ছেড়ে দিলেন। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন- তাঁর জীবনের আসল কাজ শুরু করতে হবে। ইতোমধ্যে পিতর, ফিলিপ ও নাথানিয়েল নামে কয়েকজন তাঁর কাছে এলেন। যীশু ঈশ্বরের সুখবর লোকদের কাছে প্রচার করতে শুরু করলেন।

 

যীশু প্রথমেই মন্দ পথ বাদ দিয়ে ঈশ্বরের সুখবরে বিশ্বাস করতে শিক্ষা দিলেন। তাদের মন পরিবর্তন করতে বললেন। তিনি যেহেতু নাসারেথের লোক তাই সেখানকার লোকেরা তাঁর কথা শুনতে চাইতো না। একই সাথে তিনি বিশ্রামবারে সমাজগৃহে (প্রার্থনাগৃহে) অর্থাৎ যেখানে উপাসনা হতো সেখানেও শিক্ষা দিতেন। এছাড়াও তিনি গ্রামে-গ্রামে গিয়েও শিক্ষা দিতেন। যেখানে লোকেরা খুব আগ্রহ এবং উৎসাহ নিয়ে তাঁর কথা শুনতো। যারা তাঁর কথা শুনতো তারা সবাই খুব অবাক হতো। তিনি যথেষ্ট সাহসের সাথেই দক্ষতা নিয়ে শিক্ষা দিতেন। তারা মনে মনে ভাবতো- কী করে তিনি এভাবে নতুন চিন্তা নিয়ে কথা বলেন। তাঁর কথাগুলো যেন আগুনের মতোই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এভাবেই দূরের ও কাছের অনেকেই তাঁর কাছে শিক্ষা গ্রহণের জন্য আসতে শুরু করলো। তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিক্ষা দিতেই ব্যস্ত থাকতেন। তাঁর নিজের জন্য কোনো সময়ই পেতেন না। তিনি যখন অনেক দূরে যেতেন তখনও লোকেরা তাঁর পিছু পিছু যেতে থাকতো। ক্লান্ত হলেও তিনি লোকদের সাথে থাকতেন।

একদিন অনেক লোক সাগর পাড়ে ভিড় করছে দেখে যীশু কাছেই পিতরের নৌকাটিতে উঠে একটু দূরে নিয়ে যেতে বললেন। তারপর তিনি সেখান থেকেই লোকদের ঈশ্বরের কথা শিক্ষা দিতে লাগলেন। আর শিক্ষা দিতে দিতে তিনি প্রথমে জেলে পিতর ও তার ভাই আন্দ্রিয়কে তাঁর কর্মজীবনের সঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন। আস্তে আস্তে তিনি তাঁর বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে পিতর ও আন্দ্রিয়ের সহায়তায় যাকোব ও যোহনকেও তাঁর সঙ্গী করলেন। তারা চারজনই ছিলেন জেলে। মাছ ধরা জেলে থেকে তিনি তাদের মানুষধরা জেলে হিসেবে বেছে নিলেন। তবে তিনি শুধু জেলে নয় কিন্তু আরও বেশ কয়েকজন অন্য পেশার লোকও তার সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি ১২জনকে বেছে নিয়েছেন যাতে তারা তাঁর কাজকর্ম দেখে তা অনুসরণ করতে পারে।

 

ক) ডান পাশের তথ্যের সাথে বাম পাশের তথ্যের মিল করি।

 

বাম পাশ

ডান পাশ

i) যীশু ঈশ্বরের সুখবর . . . . . . . . i) ১২ জনকে।
ii) তিনি জেলে পিতর ও তার ভাই আন্দ্রিয়কে . . . . . . . . ii) যাকোব ও যোহনকেও।
iii) তাছাড়াও তিনি তাঁর প্রচার সঙ্গী করলেন  . . . . . . . . iii) তাঁর কর্মজীবনের সঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন।
iv) যীশু তাঁর কাজের জন্য বেছে নিয়েছিলেন  . . . . . . . . iv) প্রচার করতেন।

খ) যীশু কোথায় কোথায় শিক্ষা দিতেন তা পাশের সঠিক শব্দ দিয়ে পূরণ করি।

 

গ) শুদ্ধ উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন (√) দেই। 

i) যীশু পিতরের নৌকায় উঠে শিক্ষা দিতে লাগলেন।

ii) লোকেরা যীশুকে তুচ্ছ করতো।

iii) তারা সবাই তাঁর পিছু পিছু যেতো। 

iv) যীশু ক্লান্ত হলেই তাদের ছেড়ে চলে যেতেন। 

v) তিনি সাহস ও দক্ষতা নিয়ে শিক্ষা দিতেন।

 

এ পাঠে শিখলাম

 

- যীশু ঈশ্বরের সুখবর প্রচার করলেন ও মন পরিবর্তনের আহ্বান করেন। প্রচার কাজের জন্য শিষ্যদের বাছাই করলেন।

Content added By

যীশুর গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা

পাঠ: ৩

যীশুর গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা

(মথি ৫:১-১০)

যীশু শুধু খোলা জায়গায় বা সাগরপাড়েই শিক্ষা দেননি তিনি সমাজঘরেও শিক্ষা দিতেন। তিনি তাঁর শিষ্যদের নিয়ে অনেক সময় মাঠে বা রাস্তার ধারে সবুজ ঘাসের উপরে বসতেন। তারা তাঁর দেয়া শিক্ষা গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। তিনি তাদের শিক্ষা দেন, কারা জীবনে সত্যিকারের সুখী এবং কারাই বা ধন্য। এভাবে দরিদ্র এবং অতি সাধারণ জীবন-যাপন যারা করে তারাই ধন্য এবং সুখী। সেজন্য যীশুর শিক্ষা হলো- আমরা যেন জীবনে কোনোকিছুর জন্য অতিরিক্ত চিন্তা না করি। সবসময় যেন ঈশ্বরের উপর নির্ভর করে অর্থাৎ প্রার্থনায় একনিষ্ঠ হয়ে চলতে পারি। কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে এবং কোথায় করতে হবে তাও তিনি শিক্ষা দেন। এভাবেই তাঁর প্রতিটি শিক্ষার গভীর অর্থ তিনি শিষ্যদের এবং সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে দিতেন। শিষ্যেরা যেমন যীশুর শিক্ষানুসারে জীবন-যাপন করতেন, তেমনি তাঁর কথা এবং শিক্ষা অন্যদেরকেও জানিয়েছিলেন। আমরাও যেন সেভাবেই সর্বদা করতে সচেষ্ট হই।

 

"একদিন লোকের ভিড় দেখে যীশু কাছের পাহাড়টায় গিয়ে উঠলেন। তিনি সেখানে বসলেন, তখন শিষ্যেরা তাঁর কাছে এগিয়ে এলেন। তিনি তাদের শিক্ষা দিতে শুরু করলেন-

অন্তরে যারা দীন, ধন্য তারা- স্বর্গরাজ্য তাদেরই। 

দুঃখে-শোকে কাতর যারা, ধন্য তারা- তারাই পাবে সান্ত্বনা। 

বিনয়ী কোমল প্রাণ যারা, ধন্য তারা- প্রতিশ্রুত দেশ একদিন হবে তাদেরই আপন দেশ। 

ধার্মিকতার দাবী পূরণের জন্য তৃষিত ও ব্যাকুল যারা, ধন্য তারা- তারাই পরিতৃপ্ত হবে। 

দয়ালু যারা, ধন্য তারা- তাদেরই দয়া করা হবে। 

অন্তরে যারা পবিত্র, ধন্য তারা- তারাই পরমেশ্বরকে দেখতে পারবে। 

শান্তি স্থাপন করে যারা, ধন্য তারা- তারাই পরমেশ্বরের সন্তান বলে পরিচিত হবে। 

ধর্মনিষ্ঠ বলে নির্যাতিত যারা, ধন্য তারা- স্বর্গরাজ্য তাদেরই।"

 

ক) নিচের সঠিক বাক্যগুলোর পাশে টিক (✓) চিহ্ন দেই।

i) যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে মাঠে, রাস্তার ধারে ঘাসের উপর বসতেন। 

ii) শিষ্যেরা যীশুর শিক্ষা শুনতেন না। 

iii) যীশুর শিক্ষা হলো- সর্বদা ঈশ্বরে নির্ভর করা।

iv) প্রার্থনায় অমনোযোগী হওয়াই যথার্থ। 

v) যীশু তাঁর প্রতিটি শিক্ষার গভীর অর্থ শিষ্যদের বুঝিয়ে দিতেন।

 

খ) বাম পাশের তথ্য অনুযায়ী ডান পাশের খালি জায়গায় সঠিক তথ্য লিখি।

বাম পাশ

ডান পাশ

i) অন্তরে যারা দীন, ধন্য তারাi) 
ii) দয়ালু যারা, ধন্য তারাii) 
iii) দুঃখে-শোকে কাতর যারা, ধন্য তারাiii) 
iv) শান্তি স্থাপন করে যারা, ধন্য তারাiv) 

গ) আমরা একসাথে গান করি।

অন্তরে যারা দীন, ধন্য তারা.........।

 

এ পাঠে শিখলাম

- পর্বতের উপর যীশুর দেয়া শিক্ষা যা অষ্টকল্যাণ বাণী নামে পরিচিত। অন্তরে যারা দীন এবং অতি সাধারণভাবে জীবন-যাপন করে যারা তারাই ধন্য এবং প্রকৃতপক্ষে সুখী।

Content added By

পরম আরোগ্যদাতা যীশু

পাঠ: ৪

পরম আরোগ্যদাতা যীশু

(লুক ৪:৩৮-৪০)

 

যীশু সমাজগৃহ থেকে বেরিয়ে সিমোনের বাড়িতে এসে ঢুকলেন। সিমোনের শাশুড়ী তখন প্রবল জ্বরে ভুগছিলেন; লোকেরা তাঁর জন্যে যীশুর কাছে অনুরোধ জানালো। যীশু এসে তাঁর দিকে ঝুঁকে দাঁড়ালেন, জ্বরটাকে ধমক দিলেন তিনি, আর সঙ্গে সঙ্গে জ্বরটা সিমোনের শাশুড়ীকে ছেড়ে চলে গেলো। তিনি তখনই উঠে তাদের সেবা-যত্ন করতে শুরু করলেন। সেদিন সূর্য ডুবু ডুবু, যাদের ঘরে কোনো না কোনো রোগে পীড়িত লোক ছিলো তারা সকলেই যীশুর কাছে তাদের নিয়ে আসতে লাগলো। তাদের প্রত্যেকের উপর একবার হাত রেখে তিনি তাদের সারিয়ে তুলতে লাগলেন।

সৌরভ ও সুরভী দুই ভাইবোন। তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। তাদের বাবা একজন অফিস কর্মকর্তা এবং মা একজন স্কুল শিক্ষিকা। তাদের ঠাকুরমাও তাদের সঙ্গে থাকেন। পরিবারটি খুবই ধার্মিক এবং প্রার্থনাশীল। প্রতিদিন সন্ধ্যায় একত্রে প্রার্থনা করে, বাইবেল পাঠ করে এবং বাইবেলের বাণীর অর্থ বুঝতে সহভাগিতা করে। খুব সুন্দরভাবে তাদের দিন কাটছিল। হঠাৎ একদিন ছোট সুরভী এক জটিল ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

মরণাপন্ন অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পরিবারের সবাই প্রতিদিন করজোড়ে ঈশ্বরকে ডাকতে থাকে। ডাক্তারগণও বিচলিত হয়ে পড়েন। কিন্তু সৌরভের মা-বাবা ও ঠাকুরমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো সুরভী ভালো হবেই। প্রায় দশদিন পর সকালে দেখা গেলো সুরভী জোরে জোরে প্রভুকে বলছে, "প্রভু যীশু তোমাকে ধন্যবাদ" সুরভীর সুস্থতা দেখে ডাক্তার নার্স ও অন্যান্য রোগীরা অবাক হলো। ঈশ্বরে তারাও বিশ্বাসী হয়ে উঠলো।

 

ক) সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে টিক (✓) চিহ্ন দেই।

i) যীশু উপাসনা ঘর/সমাজগৃহ/ প্রার্থনাগৃহ থেকে বেরিয়ে সিমোনের বাড়িতে গেলেন।

ii) সিমোনের শাশুড়ী তখন প্রবল জ্বরে/ঠাণ্ডায়/কাশিতে ভুগছিলেন। 

iii) লোকেরা পিতরের/ যোহনের/যীশুর কাছে অনুরোধ জানালো।

iv) যীশু জ্বরটাকে ধমক/থাপ্পর/ ধাক্কা দিলেন। 

ⅴ) সিমোনের শাশুড়ী তখন নাচতে/ সেবাযত্ন করতে/গান করতে শুরু করলো।

 

খ) চিন্তা করে সঠিক তথ্য দিয়ে ছকটি পূরণ করি।

 

এ পাঠে শিখলাম

 

- আরোগ্যদাতা যীশু মুখের কথায় অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করেন।

Content added || updated By

আধ্যাত্মিক নিরাময়কারী যীশু

পাঠ: ৫

আধ্যাত্মিক নিরাময়কারী যীশু

(যোহন ১১:৫-১৫)

যীশু তাঁর বিভিন্ন আশ্চর্য কাজের মাধ্যমে মানুষকে নিরাময়তা দান করেছেন। তিনি শুধু শারীরিক নিরাময়তা দান করেননি, আধ্যাত্মিকভাবেও নিরাময় করেছেন। তিনি মানুষকে তাঁর ভালোবাসা দিয়েও নিরাময়তা লাভের সুযোগ করে দিয়েছেন। যীশু যে একজন নিরাময়কারী তা বাইবেলের বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে জানা যায়।

মার্থা, মরিয়ম ও লাসারকে যীশু খুব ভালোবাসতেন। লাসার একদিন খুব অসুস্থ হলে মার্থা ও মরিয়ম যীশুকে অনুরোধ জানালেন যেন, তিনি তাদের বাড়িতে এসে লাসারকে সুস্থ করেন। যীশু সে সময়ে তাদের বাড়িতে আসেননি। যদিও মার্থা ও মরিয়ম ভেবেছিলো যে, তিনি হয়তো খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আসবেন। যীশুর না আসার একটি উদ্দেশ্য ছিলো। যীশু অবশ্য যিরূশালেমে আসলেন আরও দুদিন পরে। ইতোমধ্যে লাসার মারা গেছে। যীশু যিরূশালেমের কাজ শেষ করে বৈথনিয়াতে গেলেন। তখন লাসারের মৃত্যুর প্রায় চারদিন অতিবাহিত হয়েছে। মার্থা তাদের সঙ্গে দেখা করতে এলেন এবং কিছুটা অনুযোগের স্বরে বললেন যে, তিনি যদি সেখানে থাকতেন তাহলে লাসার হয়তো মারা যেতেন না। যীশু তখন তাদের বললেন যে, লাসার আবার জীবিত হবে। মার্থা যীশুর কথার অর্থ বুঝতে পারেননি। মরিয়ম তখনও যীশুর কাছে আসেননি। তাই মার্থা তাকে ডেকে নিয়ে এলেন। মরিয়ম ও মার্থার মতো অনুযোগ জানালো। মরিয়ম এরপর কাঁদতে শুরু করলেন। তার কান্না দেখে সবাই কাঁদতে শুরু করলেন। যীশুও কাঁদতে লাগলেন। সবাই বুঝতে পারলো যে- যীশু সত্যিই লাসারকে খুব ভালোবাসতেন।

 

যীশু তখন সবাইকে নিয়ে কবরের কাছে গেলেন। তিনি তাদের আদেশ দিলেন যেন, কবরের মুখ থেকে পাথরটা সরিয়ে দেয়া হয়। সবাই কিছুটা অবাক হলো। যীশু সেখানে কিছুক্ষণ প্রার্থনা করলেন এবং জোরে লাসারকে ডাকলেন। তিনি বললেন, "লাসার বেরিয়ে এসো" আর সত্যিই লাসার বেরিয়ে এলো। তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত কাপড়ে মোড়ানো ছিল। যীশুর নির্দেশে তা খুলে দেওয়া হলো। যারা সেখানে এইসব ঘটনা দেখেছে, তারা বিশ্বাস করলো যে, যীশু সত্যিই ঈশ্বর। আসলে যীশু মানুষকে আধ্যাত্মিকভাবে সুস্থতা দান করে তাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে চেয়েছেন।

 

ক) সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দেই

 

i) আশ্চর্য কাজের মাধ্যমে যীশু নিরাময়তা দান করেছেন।

ii) যীশু শারীরিক নিরাময়তা দান করেছেন। 

iii) যীশু লাসারকে মোটেই ভালোবাসতেন না। 

iv) যীশু তাদের বললেন, লাসার আবার জীবিত হবে। 

v) মার্থা যীশুর কথার অর্থ বুঝেছিলো।

 

খ) চিন্তা করি ও লিখি।

 

i) লাসার অসুস্থ হলে মার্থা ও মরিয়ম কী করেছিলেন? 

ii) যীশু কেন লাসারকে দেরিতে দেখতে এসেছিলেন? 

iii) যীশু মৃত লাসারের জন্য কী করেছেন? 

iv) তোমার কেউ অসুস্থ হলে তুমি কী করো? 

v) তোমার প্রিয় ব্যক্তি মারা গেলে তুমি কী করো?

 

গ) আমার ক্লাসের কোনো বন্ধু অসুস্থ হলে তার জন্য কী কী করতে পারি তা নমুনা ছকে লিখি।

এ পাঠে শিখলাম

- যীশু শারীরিক, আধ্যাত্মিক নিরাময়কারী ও জীবনদাতা।

Content added By

পাঠ: ৬

পরিত্রাতা যীশু

(মার্ক ১০: ৪৬-৫২)

যীশু তখন জেরিখো/ যিরীহো শহরের কাছেই এসে পড়েছেন। পথের ধারে তীময়ের ছেলে অন্ধ বরতীময় বসে আছে, সে ভিক্ষা করছে। বহু লোক তার সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে শুনতে পেয়ে সে জিজ্ঞেস করে, 'ব্যাপারটা কী ঘটছে'? লোকেরা তাকে বললো, "নাসারেথের যীশু শহরে আসছেন।" অন্ধ লোকটি তখন চিৎকার করে বলতে শুরু করে, "দাউদ-সন্তান যীশু, আমাকে দয়া করুন।" যারা আগে আগে চলছিলো, তারা তাকে ধমক দিয়ে বলে, "চুপ কর"। কিন্তু সে তখন আরও অনেক বেশি জোরে চিৎকার

করতে থাকে, "দাউদ-সন্তান যীশু, আমাকে দয়া করুন"। যীশু তখন সেখানে দাঁড়িয়ে অন্ধ লোকটিকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে বললেন। সে কাছে এলে যীশু তাকে জিজ্ঞেস করলেন, "কী চাও তুমি? বলো, তোমার জন্য আমি কী করতে পারি?" অন্ধ লোকটি উত্তর দেয়, "আমি যেন আবার চোখে দেখতে পাই!" তখন যীশু তাকে বললেন, "বেশ, তুমি আবার চোখে দেখতে পাবে। তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সারিয়ে তুলেছে।" সঙ্গে সঙ্গে সে আবার চোখে দেখতে পায়। সে তখন ঈশ্বরের বন্দনা করতে করতে যীশুর পিছনে পিছনে চলতে শুরু করে। তাই দেখে সেখানে সকলেই ঈশ্বরকে স্তুতি জানাতে শুরু করে।

 

ক) বাম দিকের তথ্যের সাথে ডান দিকের তথ্যের মিল করি।

বাম পাশ

ডান পাশ

i) যীশু ও তাঁর সঙ্গীরাi) শহরে এসেছেন।
ii) পথের ধারে বসে আছেii) "দাউদ-সন্তান যীশু, আমাকে দয়া করুন।"
iii) নাসারেথের যীশুiii) তীময়ের ছেলে অন্ধ বরতীময়।
iv) অন্ধ বরতীময় বললোiv) চুপ কর।
ⅴ) লোকেরা বরতীময়কে ধমক দিয়ে বললেন,ⅴ) জেরিখো/ যিরীহো নগরে এলেন।

খ) যীশু অন্ধ লোকটির জন্য কী কী করেছেন ডান পাশ থেকে তথ্য নিয়ে ছকে লিখি।

 

গ) সঠিক উত্তর বেছে নিয়ে টিক (√) চিহ্ন দেই।

 

i) যীশু জেরিখো/যিরীহো/জেরুসালেম/ ইস্রায়েল শহরের কাছে এসে পড়েছেন।

ii) পথের ধারে একজন/দুইজন/তিনজন অন্ধ লোক বসে আছে। 

iii) বরতীময়ের অবিশ্বাস/বিশ্বাস/ক্ষীণ বিশ্বাসই তাকে সুস্থ করেছে। 

iv) যীশু বলেছিলেন, তুমি আবার শুনতে পারবে/বুঝতে পারবে/দেখতে পারবে। 

v) সকলেই ঈশ্বরের নিন্দা/অপমান/স্তুতি জানাতে শুরু করে।

 

ঘ) আমার জানা মতে- যীশুর কাছে সাহায্য চেয়ে প্রার্থনা করে সুস্থতা লাভ করেছে সেরকম একটি ঘটনা বলি।

 

এ পাঠে শিখলাম

- বিশ্বাস নিয়ে যীশুর কাছে প্রার্থনা করলে পরিত্রাণ লাভ করা যায়।

Content added || updated By
Promotion